উপদেষ্টা আসিফের বাবার হাতে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ সহকারী প্রধান শিক্ষিকার
- By Jamini Roy --
- 28 November, 2024
কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষিকা শিখা রানী রায়কে শারীরিক নির্যাতন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগে প্রধান শিক্ষক মো. বিল্লাল হোসেন এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যরা অভিযুক্ত হয়েছেন। ঘটনার বিস্তারিত উঠে এসেছে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভূইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে।
প্রধান শিক্ষক মো. বিল্লাল হোসেন বর্তমান উপদেষ্টা আসিফের বাবা। ঘটনারদিন সকালে প্রধান শিক্ষক মো. বিল্লাল হোসেন সহকারী প্রধান শিক্ষিকাকে ফোন করে জরুরি মিটিংয়ের জন্য ডেকে নেন। সেখানে তিনি শিখা রানী রায়কে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করেন এবং পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে চাপ প্রয়োগ করেন। দুই ঘণ্টার নির্যাতনে শিখা অজ্ঞান হয়ে পড়েন, পরে তাকে পানি দিয়ে জ্ঞান ফেরানো হয়। তবে নির্যাতন থেমে থাকেনি; পরে আবার তাকে সন্ত্রাসীসহ শিক্ষক কক্ষে আটক করে ভয় দেখিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করার চেষ্টা করা হয়। যখন তিনি রাজি হননি, তখন তার বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ এবং তা প্রকাশের হুমকি দেওয়া হয়।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিল (১)শিমুল বিল্লাল(৫০) পিতা গোলাম রাব্বানী, গ্রামঃ পোঃ কাশিমপুর, (২)সালাউদ্দিন(৪২) পিতা আলী আকবর খান, (৩) আবদুস সাত্তার(৩৭) পিতা সিদ্দিকুর রহমান ও (৪)হাবিবুল বাশার(৩৬) পিতা অহেদ ব্যাপারী ভিক্টিমের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানী ও যৌন হয়রানি এবং বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে আবার অজ্ঞান হয়ে যায়।
নির্যাতনের সাথে সাথে শিখা রানী রায়ের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানী ও যৌন হয়রানিও করা হয়। আরো জানা যায়, প্রধান শিক্ষক এবং তার সহযোগীরা তাকে বলেছিলেন, যদি অভিযোগ করা হয় তবে নগ্ন ছবি ও ভিডিও ভাইরাল করা হবে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, তার ব্যাগ থেকে ২৫০০ টাকা এবং ব্যাংক চেক বইও চুরি করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর শিখা রানী রায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন, তবে পুলিশ তাকে শুধুমাত্র সাধারণ জিডি করতে বলেছিল, এবং মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তিনি সাংবাদিক সম্মেলনও করেন, তবে তা জাতীয় মিডিয়ায় প্রচারিত হয়নি। অভিযোগ অনুযায়ী, শিখা রানী রায়কে প্রশাসন থেকে ভয় দেখানো হয়, কারণ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মো. বিল্লাল হোসেন বর্তমান উপদেষ্টা আসিফের বাবা।
শিখা রানী রায় জানান, প্রশাসন তার নির্যাতনের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেয়নি এবং মামলার ব্যাপারে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, “আমি আমার চাকরি ফিরে পেতে চাই এবং আমাকে যারা নির্যাতন করেছে, তাদের বিচার হওয়া উচিত।” তিনি পুলিশ প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার দাবি করে জানান, "আমি একটি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চিত করতে চাই।"
এ ঘটনায় এলাকাবাসী এবং শিক্ষক সমাজের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেকেই ভয়ের কারণে সাক্ষ্য দিতে অস্বীকার করছেন। শিখা রানী রায়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এটি একটি গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং এর সাথে জড়িত সকল ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।